রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়াকে কেন্দ্র করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মারধরের পর তাদেরকে কলেজের শহীদ শামসুল আলম হল থেকে বের করে দেন ছাত্রলীগের তিন কর্মী।
গতকাল বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে নজরুল কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন- কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী রাকিব, মিলন ও ফিদবী।
জানা গেছে, অভিযুক্তরা সবাই কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার অনুসারী এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন- ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কাউসার, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইমরান এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল।
আহত অবস্থায় তাদের সবাইকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কাউসার বলেন, বুধবার সকালে আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এসময় ছাত্রলীগের তিন কর্মী এসে আমাকে বলেন ক্যাম্পাসে প্রোগ্রাম আছে যেতে হবে। আমি তাদেরকে বললাম আমি অসুস্থ। দুপুরে আবার আমার রুমে এসে জানতে চাইলেন ক্যাম্পাসে গিয়েছি কি না? আমি না বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে থাপ্পড় মারেন।
তিনি বলেন, এরপর রাকিব, মিলন ও ফিদবী মিলে আমাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। আমি এখন ডান কানে কিছু শুনতে পাচ্ছি না। গত ১২ নভেম্বরও আমাকে মিলন মারধর করেছেন।
কবি নজরুল সরকারি কলেজের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, আমি তাদের (অভিযুক্তদের) অনেক সিনিয়র। অথচ তারা আমাকে খুবই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। আমিসহ আরও কয়েকজনকে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। না হলে মারধর করে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী রাকিব বলেন, মারধরের ঘটনা মিথ্যা। ছাত্রলীগের নামে এরকম কুৎসা আপনারা রটায়েন না। কিছু জানতে হলে আপনাকে হলে আসতে হবে।
এ বিষয়ে শহীদ শামসুল আলম হলের সুপারভাইজার প্রভাষক মো. কামরুজ্জামান বলেন,কবি নজরুল কলেজের এই হল বাংলাদেশের একমাত্র ব্যতিক্রম।এটা পুরোটাই ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে। এখানে কে উঠে আর কে নামে- কলেজ প্রশাসন কিছুই জানে না। সবকিছু ছাত্ররা নিয়ন্ত্রণ করে।
তিনি আরও জানান, এখন শিক্ষার্থীদের কেউ যদি কলেজ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায় তাহলে সেটা কলেজ প্রশাসন দেখবে।