<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
সাজ্জাদ শরিফ
আমাদের দুয়ারে এসেছে নতুন বছর । স্বপ্ন ও সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে প্রতিটি নতুন বছর। আমরা আলোড়িত উদ্দীপিত হই। আনন্দ-উলস্নাসের পাশাপাশি আমরা অঙ্গীকার করি, নতুন বছরে নতুনভাবে চলতে। নতুনভাবে জীবনযাপন করতে, নতুন স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকারের মাধ্যমে মুখরিত হয়ে ওঠে বছরের প্রথম দিন। ব্যক্তিচরিত্র বদলেরও অঙ্গীকার করে থাকি। এভাবেই শুরু হয়, বিগত বছরের ভুলত্রুটি শুধরে নতুনভাবে, স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে পথচলার অঙ্গীকার।
নতুন বছরের শুরুতেই আরেক হিসাবনিকাশ মিলানোর প্রতিযোগিতা শুরু। আনন্দ-বেদনা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি আর সফলতা-ব্যর্থতার খতিয়ান শুরু হয়। এটা মানবজাতির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য। তবে এক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক দিক হলো, প্রাপ্তির আনন্দে অতিরিক্ত উল্লাসে মেতে ওঠা কিংবা আশাভঙ্গের বেদনায় অতিরিক্ত দুঃখবোধ করা। আনন্দের বাড়াবাড়ি তখনই হয়, যখন প্রাপ্তির আনন্দে অহংকারী হয়ে ওঠে। একইসঙ্গে কোনো অপ্রাপ্তির কারণে নিজেকে অভিশপ্ত মনে করা। এটাকে এক ধরনের প্রান্তিকতাও বলা যেতে পারে। ইসলাম এমন প্রান্তিকতা থেকে বেরিয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বনের দীক্ষা দেয়। উভয়প্রকারের প্রান্তিক প্রবণতা দূর করে ভারসাম্যের জীবন যাপনের শিক্ষা দিয়ে থাকে। আল্লাহ বলেন, “পৃথিবীতে অথবা তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে তা সংঘটিত হওয়ার পূর্ব থেকেই তা (লওহে মাহফুজে) লিপিবদ্ধ রয়েছে। এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজ। এটা এজন্য যে, তোমরা যা হারিয়েছ তাতে যেন বিমর্ষ না হয়ে পড় এবং তিনি তোমাদের যা দিয়েছেন তাতে যেন অতিরিক্ত উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। [সুরা হাদিদ : ২৩-২৪]
এ আয়াতের মাধ্যমে কোর আমাদের এ শিক্ষা দেয় যে, মানবজীবনে ভালো-মন্দ যা কিছুই ঘটে সবই আল্লাহর হুকুমেই ঘটে থাকে থাকে। লওহে মাহফুজে লিখিত তাকদির অনুযায়ীই এসব ঘটে। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনায় মানুষ হয়তো কষ্ট পেয়ে থাকে। কিন্তু কষ্ট জিইয়ে রেখে অতিরিক্ত হতাশাও হওয়া যাবেনা। একইভাবে কোনো প্রত্যাশিত প্রাপ্তির কারণে আনন্দ প্রকাশ করা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। কিন্তু স্বাভাবিক আনন্দের স্তর পেরিয়ে উল্লসিত হওয়া, অহংবোধ প্রকাশ করা কিংবা অর্জিত বিষয়কে একান্তই নিজের প্রচেষ্টার ফল মনে করা যাবে না। বরং অর্জিত প্রাপ্তিকে আল্লাহর দান মনে করে শোকর আদায় করা একান্ত কর্তব্য।
আল্লাহমুখী হওয়ার অনাবিল দীক্ষা হাদিসেও পেয়ে থাকি আমরা। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলপন, একবার রাসুল সা.-এর বাহনে বসে ছিলাম। তখন রাসুল সা. বলেন, বৎস! আমি তোমাকে শিখিয়ে দিচ্ছি। তুমি আল্লাহকে হেফাজত করবে (তাঁর হুকুম আহকাম মেনে চলবে) তাহলে তিনি তোমাকেও হেফাজত করবেন। তুমি আল্লাহকে হেফাজত করবে; তাহলে তাঁকে তোমার সামনেই পাবে। যখন কোনো কিছু চাইবে, তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হলে, আল্লাহর কাছেই সাহায্য কামনা করবে। জেনে রেখো! পুরো উম্মত (পুরো জাতি) যদি একত্রিত হয়, তোমার কোনো উপকার করার জন্য, তাহলে তোমার কোনো উপকার সাধনে সমর্থ হবে না, কেবল ততটুকুই তাদের জন্য সম্ভব হবে; যতটুকু আল্লাহ তোমার ভাগ্যে লিখেছেন। আবার সমগ্র মানবজাতি যদি তোমার কোনো ক্ষতি করতে চায়; তাহলে তারা কেবল ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তোমার কপালে লিখে রেখেছেন।। এর চেয়ে বেশি নয়। (জামে তিরমিজি)
নববী এই অমর বাণীর মাধ্যমে আমরা এ দীক্ষা পাই যে, ভালো-মন্দ সবকিছুই আল্লাহ লিখে রেখেছেন। তাই কোনো কিছু হারালে বা না পেলে তার জন্য হা-হুতাশ করা যাবেনা। কারণ, অপ্রাপ্তির ফায়সালাও আল্লাহর হুকুমে হয়ে থাকে। আবার প্রাপ্তির কৃতিত্ব নিজেকে না দিয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা একান্ত কর্তব্য। এটাও আল্লাহর দান।
মানুষের কাজ শুধু নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব ও কর্তব্য আদায় করা। কারণ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করলে আল্লাহর সাহায্য অনিবার্য। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। সুতরাং যে আল্লাহর পথে দান করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করার পাশাপাশি উত্তম বিষয়কে (ইসলাম) সত্য বলে গ্রহণ করে আমি তার জন্য সহজ পথকে সুগম করে দিব। আর যে ব্যক্তি কার্পণ্য করে এবং নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে সত্যকে (ইসলাম) অস্বীকার করে আমি তার জন্য কঠিন পথকে সুগম করে দিব। ফলে তার সম্পদ তার কোনো কাজে আসবে না। বরং সে ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ( সুরা লাইল : ৪-১১)
তাই সফলতা-ব্যর্থতা কিংবা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির জন্য শুধুই আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে। নিজের কৃতিত্ব দেখানো কিংবা নিজেকে দোষারোপ করে হাহুতাশ করার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। বিগত বছরের অপ্রাপ্তির বেদনায় নীল হওয়া মুমিনের কাজ নয়। আবার নিজের প্রাপ্তির জন্যও অহংবোধ প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই। তাই আমাদের কর্তব্য বিগত বছরগুলোর অপ্রাপ্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছরের আগামী দিনগুলো যেন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে সেব্যাপারে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা। অতীতের অপ্রাপ্তি ও ব্যর্থতা কাটিয়ে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন!