





ব্যাপক আয়োজন আর অপেক্ষার পর উদ্বোধন হয়েছে স্বপ্নের মেট্রোরেলের। দেশের উন্নয়নের নতুন এই মাইলফলকের সাক্ষী হতে প্রতিদিনই যাত্রীদের ভিড় লক্ষণীয়। মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হতেও তোড়জোড় করেছে ঢাকাবাসী। তবে এতসব আয়োজন আর উল্লেখের মধ্যে লজ্জার এক নজিরই গড়েছেন ঢাকার আলোচিত মুখ হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন। “ঢাকার পোস্টারবয়” খ্যাত হাজী মিলনই মেট্রোরেলের পিলারে প্রথম পোস্টার সাঁটিয়েছেন।
হাজী মিলনকে নিয়ে অবশ্য এমন বিরক্তি নতুন নয় রাজধানীবাসীর। ব্যস্ত শহরের প্রায় সবখানেই আছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন। উত্তরা-খিলক্ষেত বা সদরঘাট-গুলিস্তানের অলিগলি, দোয়াল-ফটক, গাছপালা কিংবা বৈদ্যুতিক খুঁটি, সবখানেই তার মুখচ্ছবি সম্বলিত পোস্টার বিরক্তির জন্ম দিয়েছে ঢাকাবাসীর মাঝে।
নির্বাচন, যেকোনো উপলক্ষ, দলীয় কর্মসূচি বাদ দিলেও সারাবছর ধরে ‘পোস্টার’ হয়ে ঢাকার অলিগলিতে বিরাজ করছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন।
শহরের “পোস্টারবয়” খ্যাত হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন মূলত পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হয়ে হেরেছেন দুই বার।

হাজী মিলন ঢাকা দক্ষিণে রাজনীতি করলেও উত্তর ঢাকাতেও তার পোস্টার ও প্রচারনা দেখা যায়। গত ২০ বছর ধরে তিনি নিজের পোস্টার লাগিয়ে আসছেন বলেন জানান হাজী সাইফুদ্দিন।
রাজধানীর বিভিন্ন দেয়ালে লাগানোর পাশাপাশি তার পোস্টার এমন উঁচুতে লাগানো হয়েছে যে, এসব সরাতে দরকার বড় বড় মই। আবার দলীয় ব্যানারে টানালেও অধিকাংশ পোস্টারে বিশেষ জায়গা পায়নি তার দলীয় প্রধানের ছবি বা দলের লোগো।
নগরীর সৌন্দর্যহানির দায়ে অনেকবার সাইফুদ্দিন মিলনকে সতর্ক করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনই। পোস্টার লাগানোর দায়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)।

সিটি করপোরেশন আইন-২০১২ অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা ভেঙে দেয়াললিখন, পোস্টার ও সাইনবোর্ড লাগালে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড ভুগতে হবে। পোস্টারের মাধ্যমে যিনি সুবিধাভোগী, তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এসব নিয়ে অনেক আগেই হাজী মিলনকে সতর্ক করা হলেও তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই তার। ২০১৮ সালের পুরাতন সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় এর সত্যতা। তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে অনেকবার সর্তক করা হয়েছে। পোস্টার ওঠানোর নির্দেশ দিয়েছি, কিন্তু সম্ভব হয়নি। আর পোস্টার তো সবাই লাগায়, আমি একা নই। দলের কর্মীরা লাগিয়ে থাকে।’
অবশ্য “অনেকেই নিজের ছবি দেখতে পাননা বলেই খারাপ লাগে”- এমন মন্তব্যও করেছেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। সম্প্রতি দেশের আরেক সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় বের হলেই আমারে দেখা যায়, এই জন্য অন্যদের খারাপ লাগে। আমার ছবি কেন রাস্তায় দেখা যায়, তাদের ছবি কেন দেখা যায় না– এ জন্যে তাদের খারাপ লাগে।
অনেকে তার প্রশংসা করে এমন দাবিও করেছেন এই নেতা। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে দেড়-দুই কোটি মানুষ থাকে। এর মধ্যে দুই-তিন শ মানুষ সমালোচনা করে। কারণ তাদের খারাপ লাগে, আর বাকি মানুষ প্রশংসা করে। এই দুই-তিন শ লোকের ছবিসহ পোস্টার লাগায় দেন, দেখবেন তাদের কাছেও ভালো লাগবে।’