18.2 C
New York
Wednesday, October 4, 2023

Buy now

spot_img

স্বাধীনতা: ইসলামেই মুক্তি, ইসলামেই স্বাধীনতা

<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/op8E2Cp.jpg“></figure>

সাজ্জাদ শরিফ
মুক্তি ও স্বাধীনতার চাহিদা মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। মানুষ মুক্তি চায়, মুক্ত ও স্বাধীন থাকতে চায়। পরাধীনতার শৃঙ্খলে তার প্রাণ হাঁপিয়ে ওঠে। মানুষের স্বভাবের এই মুক্তিপ্রিয়তা একটি প্রয়োজনীয় প্রেরণা। তবে তা  সঠিক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পরিচালিত হলে কল্যাণকর হতে পারে। আবার এই প্রেরণাই হয়ে উঠতে পারে মানুষের ব্যক্তি-জীবন ও সমাজ-জীবনে অনিষ্ট-অকল্যাণের কারণ। যদি অপব্যবহার বা ভুল ব্যবহার হয়। সহজ ভাষায় বলতে পারি, মানুষের সকল প্রেরণার মতো এটি এমন এক প্রেরণা, যা সঠিক ব্যবহারের ফলে মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করে।

ইসলামি শিক্ষা ও দাওয়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানবীয় যোগ্যতা ও প্রেরণাসমূহের সঠিক ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের নির্দেশনা।

মানুষের মুক্তিকামী মানোভাবের সাথে ইসলামি দাওয়াত কত সামঞ্জস্যপূর্ণ! মানুষও মুক্তি পেতে চায়, ইসলামও এসেছে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে।

মানুষকে প্রকৃত মুক্তি ও স্বাধীনতার পরিচিত করে তোলে ইসলাম। ফলে ইসলামি জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হৃদয় কখনোই প্রতারিত হয় না। জীবন ও জগতে পরাধীনতার ক্ষেত্রগুলো তার সামনে স্পষ্ট থাকে। মুক্তি ও স্বাধীনতার উপায় সম্পর্কেও সে থাকে ওয়াকিফহাল। ইসলামের সোনালি ইতিহাসের পাতায় পাতায় এমন সৌন্দর্যময় শিক্ষার শত শত উপমার দেখা মেলে।

ইসলামি দাওয়াতের এক দায়ী হযরত রিবয়ী ইবনে আমের রা.-এর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল ইসলামী দাওয়াতের এই মর্মবাণী। পারস্য-সেনাপতি রুস্তমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছি, মানুষকে সৃষ্টির দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে এক আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত করার জন্য; পৃথিবীর সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি দিয়ে পৃথিবীর প্রশস্ততার দিকে নিয়ে আসার জন্য এবং সকল ধর্ম ও মতবাদের যুলুম-অবিচার থেকে মুক্ত করে ইসলামের সাম্য ও সুবিচারের ছায়াতলে নিয়ে আসার জন্য।’

ইসলামের এই প্রাজ্ঞ দায়ী, আল্লাহর পথের এই মুজাহিদের কণ্ঠে উচ্চারিত এই বাক্যগুলোতে যেমন ধ্বনিত হয়েছে ইসলামী দাওয়াতের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তেমনি নির্দেশিত হয়েছে মানুষের দাসত্ব ও মুক্তির ক্ষেত্রগুলোও।

আর তা উচ্চারিত হয়েছিল তৎকালীন বিশ্বের এক ‘সুসভ্য’ পরাশক্তির মহাক্ষমতাধর সেনাপতির সম্মুখে। অর্থাৎ তৎকালীন বিশ্বে শক্তি-সভ্যতায় অনন্য জাতিটি দাসত্বের যে ডাণ্ডা-বেড়িতে বন্দী-জীবন যাপন করছিল তার প্রতিই অঙ্গুলি নির্দেশ করছিল মুসলিম বাহিনীর এই মহান দায়ী ও মুজাহিদের উচ্চারণ।

সেই দাসত্বের প্রধান শিরোনাম হচ্ছে, সৃষ্টির উপাসনা। মানুষের স্রষ্টা আল্লাহ। গোটা বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা তিনি। মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য আর পৃথিবীর সকল কিছুকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের প্রয়োজন পূরণের জন্য; মানুষেরই কল্যাণার্থে। অথচ যুগে যুগে অসংখ্য মানুষ, অসংখ্য জাতি-গোষ্ঠী সৃষ্টির উপাসনায় লিপ্ত হয়েছে। অসংখ্য কল্পিত দেব-দেবীর উপাসনা ও প্রভুত্বের শৃঙ্খলে নিজেদের আষ্টেপৃষ্ঠে আবদ্ধ করেছে। ইসলাম এসেছে মানবজাতিকে এই পৌত্তলিকতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য।

মনুষ্যসমাজেও একশ্রেণির মানুষ প্রভুর আসনে সমাসীন হয়েছে; শক্তি, ক্ষমতা, মতাদর্শের ভিত্তিতে এরা উঠে যায় সকল জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। পক্ষান্তরে মানুষের বৃহত্তর শ্রেণিটি নেমে আসে দাসের পর্যায়ে, বঞ্চিত হয় সুনিশ্চিত প্রাপ্য অধিকার থেকে। মনুষ্যসমাজের এই দাস-প্রভুর সমীকরণ সমাজে অন্যায়-অবিচারের বিস্তার ঘটায়। মানুষের জান-প্রাণ, অর্থ-সম্পদ, ইজ্জত-আব্রুকে অনিরাপদ করে তোলে। বাহ্যত এই মানুষগুলো মুক্ত-স্বাধীন হলেও এরা বাস করে ভয় ও আতঙ্ক, অবিচার ও বঞ্চনার নানা শঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে। ইসলাম মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ ভেঙে দিতে এসেছে। তাই দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা দিয়েছে এই বলে, “সকল মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি। তিনিই একমাত্র রব, প্রভু ও পরওয়ারদেগার। তাঁরই আদেশ পালনে সবাই বাধ্য। তাঁর বিধানে কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।” আইন ও অধিকারের এই সাম্যই তো মুক্তি ও স্বাধীনতা।

বন্দিত্বের আরেক রূপ হচ্ছে, মানবরচিত নানা মতবাদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়া? যুগে যুগে কত মতবাদ রচিত হয়েছে আর বিলুপ্ত হয়েছে কে তার হিসাব রাখে? আসমানী ধর্মসমূহের যে বিকৃত রূপ সে-ও তো এক অর্থে মানবরচিত মতবাদ। ধর্মের পাদ্রি-পুরোহিত প্রচারকেরা মূল ধর্ম-ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে নিজেদের মনগড়া নানা চিন্তা ও বিশ্বাসের বাধ্যবাধকতা, বিভিন্ন আরোপিত রীতি-নীতি পালনের যে ঘোষণা দিয়েছে, তার কি কোনো ইয়ত্তা আছে? এসব আরোপিত রীতি ও বিশ্বাসের কারণে যুগে যুগে কত যে মানুষের প্রাণহানী, সম্পদহানী ও সম্মানহানী ঘটেছে তার খবর কে রাখে? যুগে যুগে বিপ্লবের বার্তা নিয়ে যেসব মতবাদের উদ্ভব ঘটেছে; প্রচার-প্রতিষ্ঠায় শেষ হয়ে গিয়েছে লক্ষ-কোটি আদমসন্তানের মেধা-শ্রম-জীবন। কালের পরিক্রমায় অসারতা প্রমাণিত ও প্রকাশিত হলে মানুষজন পঙ্গপালের মত ছুটে চলেছে আরেক মতবাদের পেছনে। এই যে বন্দিত্বের কোনো ব্যাখ্যা আছে কি?

মানুষ চিরজীবী নয়। আয়ুও লক্ষ বছরের নয়। কিন্তু প্রতিটি প্রত্যেক মানুষকেই নিজ নিজ বিশ্বাস ও কর্ম নিয়েই দাঁড়াতে হবে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায়। তবে বিভ্রান্তির এমন চোরাবালিতে ঘুরে মরবার অবকাশ কোথায় মানুষের জীবনে?

এই সকল প্রকারের বন্দিত্বের শৃঙ্খল থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্যই ইসলামের আবির্ভাব। মানুষের কর্তব্য, স্বাধীনতা ও পরাধীনতার স্বরূপ সঠিকভাবে উপলব্ধি করে মুক্তির পথের পথিক হওয়া। আমাদের ব্যক্তি-জীবন, পারিবারিক-জীবন, সমাজ-জীবন ও রাষ্ট্রীয়-জীবন যে অশান্তি-অস্থিরতা, অনাচার-অরাজকতা, অবক্ষয়-উচ্ছৃঙ্খলায় ভারাক্রান্ত; এর প্রকৃত কারণ- ইসলামের জীবন-ব্যবস্থা ত্যাগ করে আমাদের প্রকৃত কর্তব্য ও করণীয় ভুলে বসে আছি আজকের আমরা। ভুলে বসে আছি ইসলামের সৌন্দর্যময় আলোকিত শিক্ষা ও বুক চিতিয়ে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার নববী দীক্ষা। ফলে মুসলিম হয়েও আমরা যাপন করে চলেছি এক বন্দী-জীবন। তাই আমাদের একান্ত কর্তব্য, আবারো ইসলামের দিকে ফিরে আসা। তাহলেই আমরা আবার মুক্ত হব, স্বাধীন হব।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,878FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles